Music Video
Music Video
Credits
PERFORMING ARTISTS
Srikanta Acharya
Lead Vocals
Soumitra Chattopadhyay
Lead Vocals
COMPOSITION & LYRICS
Rabindranath Tagore
Songwriter
PRODUCTION & ENGINEERING
Gopa Roy
Producer
Lyrics
রবীন্দ্রনাথই ছিলেন তাঁর গানের শ্রেষ্ঠ রূপকার
যার খুব সামান্য প্রামাণ্য নিদর্শন ধরা আছে উত্তরকালের কাছে
তাঁর গাওয়া সেইসব গানগুলি যখন অন্যের কণ্ঠে শুনি
তখনই গীতকার সুরকার রূপকার রবীন্দ্রনাথের অনন্যতা সহজেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে
বেদনা সঞ্জাত সেইসব গানের সংবেদনশীল অনাস্বাদিত আবেদন মনে করিয়ে দেয়
তিনি নিজের কাছে নিজের গানের সুরে বাঁধা
গায়ক রবীন্দ্রনাথ স্রষ্টা রবীন্দ্রনাথের চেয়ে খাটো ছিলেন না কোনো অংশেই
তাঁর গলায় ছিল একলা মানুষের কণ্ঠে হাজার পাখির গান
তাঁর গানে কোথাও কোনো ফাঁক ছিল না
নিজেই তিনি বলেছেন-
"আমি বাণীর সাথে বাণী, আমি গানের সাথে গান, আমি প্রাণের সাথে প্রাণ"
অবনীন্দ্রনাথ তাঁর প্রিয় রবি কাকার বিষয়ে তাই তো বলেছেন, "তাঁর গানই তাঁর আসল জীবনী"
রবীন্দ্রনাথের গান কত না অনুষঙ্গে ছড়িয়ে আছে অবনীন্দ্র স্মৃতিতে
আর জড়িয়ে আছে সেইসব মানুষের লেখায় যারা সাক্ষী ছিলেন দুর্লভ সেই সৃষ্টি মুহূর্তগুলির
একটুখানি প্রত্যাশা জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ উত্তরকালের কাছে-
"হয়েছে শেষ, তবুও বাকি কিছু তো গান গিয়েছি রাখি
সেটুকু নিয়ে গুনগুনিয়ে সুরের খেলা খেলো"
এই সংকলনে ধরা রইলো রবীন্দ্রনাথ রচিত
অজস্র গানের ভেতর থেকে তুলে আনা অনুপম গানের একটি গুচ্ছ
সৃজনবেদনা আর সকণ্ঠে গান গাইবার উজ্জ্বল অনুষঙ্গী
শিলাইদহ থেকে ২০শে সেপ্টেম্বর ১৮৯৫ রবীন্দ্রনাথ ইন্দিরা দেবীকে লিখছেন-
"আজ সেই ঝড়ের ভাবটা থেমে গিয়ে সকালে অল্প অল্প রোদ্দুর ওঠবার চেষ্টা করছে
কিন্তু এখনো সম্পূর্ণ কৃতকার্য হতে পারেনি
মেঘ আকাশময় ছড়ানো, পুবে হাওয়া খুব বেগে বইছে
ওপারে বিকশিত কাশবন আগুনের শিখার মতো ক্রমাগত কাঁপছে"
"এখান থেকে দূরের পদ্মার গর্জন শোনা যাচ্ছে
কাল পরশু দু'দিন ঠিক আমার সেই নতুন গানের মতো দৃশ্যটা হয়েছিল-
ঝরঝর বরিষে বারিধারা
ফিরে বায়ু হাহাস্বরে
জনহীন অসীম প্রান্তরে
অধীরা পদ্মা তরঙ্গ-আকুলা
নিবিড় নীরদ গগনে ইত্যাদি"
"তার মধ্যে এই হতভাগ্য গৃহহারা ব্যক্তিটি
স্টিমারের ছাতের ওপরে আপাদমস্তক ভিজে একেবারে কাদা হয়ে গিয়েছিল
গায়ে সেই আমার মস্ত রেশমের আলখেল্লা পরা ছিল
সেটা ঝড়ো বাতাসে চতুর্দিকে অত্যন্ত হাস্যকরভাবে উড়ে বেড়াতে লাগলো
চোখের চশমা জল লেগে ঝাপসা হয়ে এলো
হাতে যে বই ছিল তার মলাটটা আমার করকমলে অবিরল রঙিন অশ্রুপাত করতে লাগলো"
"আমি কাল পরশু প্রায় মাঝেমাঝে সেই গানটি গাচ্ছিলুম
গাওয়ার দরুণ বৃষ্টির ঝরঝর, বাতাসের হাহাকার
গোরাই নদীর তরঙ্গধ্বনি একটা নতুন জীবন পেয়ে উঠতে লাগলো
চারিদিকে তাদের একটা ভাষা পরিস্ফুট হয়ে উঠলো
এবং আমিও এই ঝড় বৃষ্টি বাদলের সুবিশাল গীতিনাট্যের
একজন প্রধান অভিনেতার মধ্যে দাঁড়িয়ে গেলুম"
গান প্রভৃতি কতগুলি জিনিস আছে যা মানুষকে এই কথা বলে যে
তোমরা জগতের সকল জিনিসকে যতই পরিস্কার বোধগম্য করতে চেষ্টা করো না কেন
এর আসল জিনিসটাই অনির্বচনীয়
এবং তারই সঙ্গে আমাদের মর্মের মর্মান্তিক যোগ
তারই জন্যে আমাদের এত দুঃখ, এত সুখ, এত ব্যাকুলতা
ঝরঝর বরিষে বারিধারা
ঝরঝর বরিষে বারিধারা
হায় পথবাসী, হায় গতিহীন, হায় গৃহহারা
ঝরঝর বরিষে বারিধারা
ঝরঝর বরিষে বারিধারা
ফিরে বায়ু হাহাস্বরে
ফিরে বায়ু হাহাস্বরে
ডাকে কারে জনহীন অসীম প্রান্তরে
রজনী আঁধারা
রজনী আঁধারা
হায় পথবাসী, হায় গতিহীন, হায় গৃহহারা
ঝরঝর বরিষে বারিধারা
ঝরঝর বরিষে বারিধারা
অধীরা যমুনা তরঙ্গ-আকুলা
অকূলা রে, তিমিরদুকূলা রে
অধীরা যমুনা তরঙ্গ-আকুলা
অকূলা রে, তিমিরদুকূলা রে
নিবিড় নীরদ গগনে
গরগর গরজে সঘনে
চঞ্চলচপলা চমকে
চঞ্চলচপলা চমকে নাহি শশীতারা
হায় পথবাসী, হায় গতিহীন, হায় গৃহহারা
ঝরঝর বরিষে বারিধারা
ঝরঝর বরিষে বারিধারা
হায় পথবাসী, হায় গতিহীন, হায় গৃহহারা
ঝরঝর বরিষে বারিধারা
ঝরঝর বরিষে বারিধারা
Written by: Rabindranath Tagore


